মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে ছাত্রসংসদ নির্বাচনসহ ছাত্রশিবিরের ১০ দফা দাবি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৩৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে চলমান সংকট ও সীমাবদ্ধতা দূর করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে অধ্যক্ষ বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ শাখা। স্মারকলিপিতে ছাত্রসংসদ নির্বাচন, ‘জুলাই বিপ্লবের’ স্পিরিট ধারণ করে বৈষম্যহীন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ার জন্য দশটি দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলেজের ছাত্র সংসদের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ শাখা। এর আগে কলেজে শিবিরের সভাপতি আরাফাত আহমদ এবং সেক্রেটারি সুমন আহমদ সাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরাফাত জানান, ছাত্রশিবির মনে করে হাজারো ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদ মুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ এসেছে। এই নতুন বাংলাদেশে ১৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ আমাদের প্রাণের ঠিকানা হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে তারা উল্লেখ করে।
স্মারকলিপিতে উত্থাপিত দাবিগুলো হলো, জুলাই চেতনাকে ধারণ করে ক্যাম্পাসে ‘জুলাই কর্নার’ স্থাপন করতে হবে। জুলাই স্পিরিট এর আলোকে একাডেমিক ভবন(৫ম তলা) এর নামকরণ করতে হবে। ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও ছাত্রসমাজের প্রাণের দাবি ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে হবে। ছাত্রসংসদ কার্যালয় সংস্কার করতে হবে এবং গঠনতন্ত্র সংশোধন ও পরিমার্জন করে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে নতুন আবাসিক হল নির্মাণ ও পুরাতন হল সংস্কার করতে হবে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ আবাসিক হল নির্মাণ করতে হবে। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজের স্থান পরিবর্ধিত ও সংস্কার করতে হবে। অতিদ্রুত নতুন নাসের যাতায়াত রুট নির্ধারণ করে বাসগুলো চালু করতে হবে। আধুনিক শিক্ষার চাহিদা পূরণে সমাজ বিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট সহ আরোও কয়েকটি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার সুন্দর ও নির্মল পরিবেশ নিশ্চিত্তে শ্রেণিকক্ষ সংস্কার করতে হবে। শিক্ষামূলক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, বিতর্ক ইত্যাদি নিমিত্তে অডিটোরিয়াম দ্রুত সংস্কার করতে হবে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে মশা নিধনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং ক্যাম্পাসের ওয়াশরুম সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। তালিকা করে নির্দিষ্ট সংখ্যক আর্থিক অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা-ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নারী শিক্ষার্থী হয়রানি এবং মাদকমুক্ত ক্যম্পাস গড়তে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। সিসি ক্যামেরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে হবে।

স্মারকলিপিতে আশা প্রকাশ করে ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত আহমদ বলেন, কলেজ প্রশাসন আমাদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং বৈষম্যহীন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠনে ছাত্রশিবির সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মনসুর আলমগীর বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, এখানে শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আছে। এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য তারা দাবি করেছেন। আমি একাডেমিক কাউন্সিলের আলোচনা করব, আলোচনার পর যেসব সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান সম্ভব, আমি তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করব। একই সাথে অন্যান্য বিষয়ের ব্যবস্থা করব।