দেশ গড়তে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা মৌলভীবাজারে
বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চায় এনসিপি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ জুলাই ২০২৫, ৪:০৯ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চায় এনসিপি। মৌলভীবাজারের পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ বলেছেন, পুরনো সিস্টেমে পুরনো আইনে এই বাংলাদেশকে আর চলতে দেব না। অভ্যুত্থানের পরে নানা শক্তি চেষ্টা করছে দেশকে পুরোনা কায়দায় এগিয়ে নেবার। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই। তরুণরা কর্মসংস্থানের দাবিতে রাজপথে নেমেছিল। বাংলাদেশের জনগণ অর্থনৈতিক বৈষম্য বিলোপের দাবি, মানবিক মর্যাদা ও নিজেদের স্বাধীনতার জন্য রাজপথে নেমেছিল। আমরা সেই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পেলেও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও কর্মসংস্থানের দাবি এখনও পুরণ করতে পারি নাই।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে মৌলভীবাজারের বেরিরপাড় পয়েন্টে দেশে গড়তে জুলাই পথযাত্রা শেষে পথসভায় এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, তিনি আরো বলেন, অন্তবর্তী সরকারের সময়ে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম, আমাদের অনেক দাবি ছিল। কিন্তু আমাদের সব স্বপ্নকে নির্বাচনের সাথে একমাত্র দাবিতে রূপান্তর করে ফেলা হয়েছে। আমরা নির্বাচন চাই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করার শক্তি। কিন্তু বিচার সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অর্থহীন হয়ে যাবে। এই নির্বাচনকে জনগণ গ্রহণ করবে না। ফলে বিচার সংস্কারে যতটুকু আমরা এগিয়েছি তার পক্ষে ঐক্যমত হয়ে আমাদেরকে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। পুলিশ হত্যাকে ডমিনেট করে এর দায় অভ্যুত্থানকারী ছাত্র জনতাকে দেয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ৩ আগস্ট এক দফায় স্পষ্ট করেছি আমাদের লড়াই শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরক্ত পরিণত হয়েছে। আমাদের যে দমন নিপিড়ন করা হয়েছে আমরা বাধ্য হয়েছিলাম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। আমাদের লড়াই ছিলো ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরোধী।
জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, এই বাংলাদেশের মানুষদের কে নানাবিধভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে সাংবাদিকতার নামে অপ-সাংবাদিকতা। সত্যের মোড়কে অসত্য তথ্য বাংলাদেশের মানুষদের সেন্টিমেন্টের বিপরীতে গিয়ে সুশীলতার মোড়কে বাংলাদেশ বিরোধী কথাবার্তা যারা প্রচার করছেন, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বোভৌমত্বের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এই বাংলাদেশের মানুষ তারা ২৪ এর অভ্যূত্থানে তারা জীবন দিতে গিয়ে আমাদের চোখ খুলে গেছে। তারা সুশীলতার মোড়কে বাংলাদেশের বিপক্ষে অবস্থান নেয় স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কথা বলে সম্প্রীতির বিরুদ্ধে কথা বলে বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয়ভাবাবেগের বিরুদ্ধে কথা বলে সম্প্রীতির বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকে চিহ্নিত করতে আমাদের আর সময় লাগে না। অতএব এ বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হলে এদেশের সকল জনতাকে আমাদের এক হতে হবে। হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রীষ্টান এই বাংলাদেশ না না জাতিসত্তার মানুষ চাকমা বার্মা কোনো ধর্মের জাতিগত ভেদাভেদের মধ্যদিয়ে আমরা আর থাকতে চাই না।
দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন, চাকরির জন্য তরুণ প্রজন্ম মাঠে নেমেছিল। তরুণ প্রজন্মর চাকরি হয় নাই। উপদেষ্টাদের বাড়ি হয়েছে। উপদেষ্টাদের সব কিছু হয়েছে। বড় বড় মাফিয়াদের সব কিছু হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্য দখল হয়েছে। কিন্তু আমার যারা যুব ছাত্র ভাই বাংলাদেশে তাদের কোনো ব্যবস্থা হয় নাই। তরুণ প্রজন্মের কোনো চাকরি হয় নাই। যারা মিডিলক্লাস ফ্যামেলি রয়েছে, তারা যখন সবজি কিনতে যায় তখন আর বাজেটে হয় না। কোনো কিছু কিছু কেনা কাটা না করে বাসা বাড়িতে ফিরে যায়। এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না। এনসিপির নেতৃত্বে জনগনের সরকার গঠন হলে ৬৪ জেলায় চাকরির ব্যবস্থা করবো।
সকালে থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে মৌলভীবাজার শহরের বেরিরপাড়ে জড়ো হতে থাকেন এনসিপির নেতাকর্মীরা। শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সেখান থেকে শুরু হয় দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা। কোর্ট রোড ও শাহ মোস্তফা সড়ক প্রদক্ষিণ করে তারা যোগদেন পথ সভায়। দুপুরে সেখানে একে একে বক্তব্য রাখেন নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী, আখতার হোসেন ও নাহিদ ইসলাম।
আরো বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাশ, সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দীনা। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব,এহতেসামুল হক, মনিরা শারমিন, যুগ্ম আহবায়ক অর্পিতা শ্যামা দেব, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ডা: জাহেদুল ইসলাম, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ডা. জাহেদ, সংগঠক মারুফ আল হামিদ, জাকারিয়া ইমনসহ স্থানীয় জেলা এনসিপির সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী এহেসান জাকারিয়া, কবিরুল ইসলাম রুমন, তামিম আহমদ, সানাউল ইসলাম সুয়েজ, সাফওয়ান জাহান চৌধুরী, সৈয়দ মুফলে উস সালেকীন, আব্দুল্লাহ আল হোসাইন, আব্দুল বারী খোবায়েব, শামায়েল রহমান প্রমুখ। শ্রীমঙ্গলে চা-শ্রমিক ও স্থানীয় মণিপুরী জনগোষ্ঠীর সাথে মতবিনিময় করেন এনসিপি নেতৃবৃন্দ।