হাইল হাওরে হাওর রক্ষা আন্দোলনের পোনা মাছ অবমুক্ত
“হাওরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে দেশীয় মাছের সংরক্ষণ অপরিহার্য”
প্রকাশিত হয়েছে : ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:৫৩ অপরাহ্ণ

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানভীর হোসেন।
তিনি বলেন, “হাওরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে দেশীয় মাছের সংরক্ষণ অপরিহার্য। পোনা অবমুক্তকরণের মাধ্যমে হাওরে মাছের উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি স্থানীয় জেলেদের জীবনমানও উন্নত হবে।”
তিনি আরো বলেন, প্রাকৃতিক উৎস থেকে দেশীয় মাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আধুনিক মৎস্য চাষ, নির্বিচারে মাছ ধরা, পানি দূষণ ও হাওরের প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমন সময়ে হাওরে দেশীয় প্রজাতির পোনা অবমুক্ত করা অত্যন্ত ইতিবাচক উদ্যোগ”।
হাওর রক্ষা আন্দোলন জানায়, হাওরে পোনা মাছ অবমুক্ত করলে একদিকে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে, অন্যদিকে হাওরকেন্দ্রিক মাছের ওপর নির্ভরশীল হাজারো পরিবার অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। এই কর্মসূচি শুধু প্রতীকী নয়, নিয়মিত উদ্যোগ হিসেবে চালু করতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকে মাছের প্রজনন মৌসুমে সচেতন হতে হবে যাতে অবাধে মাছ ধরা বন্ধ থাকে।
হাওর রক্ষা আন্দোলন মৌলভীবাজারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মুয়াজ্জেম হোসেন বলেন, হাওরের অস্তিত্ব মানেই আমাদের জীববৈচিত্র্যের ভাণ্ডার। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আজ দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে। নির্বিচারে মাছ ধরা, হাওরের পানি দূষণ আর প্রজনন মৌসুমে সচেতনতার অভাবই এর প্রধান কারণ। তাই আমরা হাওর রক্ষা আন্দোলন থেকে নিয়মিত পোনা অবমুক্ত করছি। এতে শুধু মাছের সংখ্যা বাড়বে না, বরং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে। আমাদের লক্ষ্য হাওরকে আবার দেশীয় মাছের আঁতুড়ঘরে পরিণত করা।

হাওর রক্ষা আন্দোলন মৌলভীবাজারের সদস্য সচিব এম খছরু চৌধুরী বলেন, হাইল হাওর শুধু মাছের ভাণ্ডার নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেশীয় মাছের প্রজাতি ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই হাওরে মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ হোক, যেন প্রাকৃতিকভাবেই মাছ বাড়তে পারে। আজকের পোনা অবমুক্তকরণ তারই অংশ। আমরা বিশ্বাস করি, স্থানীয় মানুষ যদি সচেতন হয় এবং সবাই মিলে হাওরের পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে, তাহলে আবারো হাওর দেশীয় মাছের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে।
হাওর রক্ষা আন্দোলন মৌলভীবাজারের আহ্বায়ক আসম সালেহ সোহেল বলেন, হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা শুধু আমাদের নয়, আগামী প্রজন্মের দায়িত্বও। দেশীয় মাছ রক্ষায় এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে একদিন হয়তো আমাদের সন্তানরা এসব মাছ শুধু বইয়ে পড়বে। তাই আমরা বারবার বলছি হাওরে নির্বিচারে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে, প্রজনন মৌসুমে সচেতনতা বাড়াতে হবে। পোনা অবমুক্ত করার মাধ্যমে আমরা শুধু মাছ বাড়াচ্ছি না, বরং হাওরের প্রাণ ফিরে আনার চেষ্টা করছি। আমাদের এ উদ্যোগে সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানাই।