আদর্শ নাগরিক গঠনে শিক্ষার্থীদের আল্লাহভীরু ও সৎ হওয়ার অনুপ্রেরণা: বশির আহমদ
প্রকাশিত হয়েছে : ৮ অক্টোবর ২০২৫, ৬:১৯ অপরাহ্ণ
বশির আহমদ:
শিক্ষিত সমাজের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো নতুন প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য কেবল তথ্য সরবরাহ নয়; বরং নৈতিকভাবে দৃঢ়, আত্মিকভাবে আলোকিত এবং দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন এমন এক প্রজন্ম, যারা হবে আল্লাহভীরু, সৎ ও দায়িত্ববান নাগরিক।
আল্লাহভীরুতা (তাকওয়া): নৈতিকতার ভিত্তিপ্রস্তর
প্রকৃত শিক্ষার সূচনাবিন্দু হলো আল্লাহভীরুতা। অন্তরে আল্লাহর ভয় ও ভালোবাসা না থাকলে শিক্ষা তার উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হয়। তাকওয়া মানুষকে অন্যায় থেকে বিরত রাখে, ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সাহস জোগায় এবং অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে। আদর্শ নাগরিক গঠনে এই গুণটি অনিবার্য।
সততা: আদর্শ চরিত্রের চাবিকাঠি
সততা ছাড়া কোনো মানুষ পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে না। সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা ও ন্যায়পরায়ণতা মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আজকের সমাজে সৎ মানুষের ঘাটতি দিন দিন প্রকট হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের উচিত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সততার চর্চা করা এবং তা নিজেদের স্বভাবের অংশ করে তোলা।
দক্ষ নাগরিকত্ব: সময়োপযোগী প্রয়োজন
শুধু নৈতিক গুণ নয়, সময়ের দাবি পূরণে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন অত্যন্ত জরুরি। কোরআন-সুন্নাহর পাশাপাশি প্রযুক্তি, ভাষা ও আধুনিক বিজ্ঞানেও শিক্ষার্থীদের পারদর্শী হতে হবে। তাহলেই তারা ইসলামের সৌন্দর্য বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে পারবে এবং দেশের উন্নয়নেও রাখবে অগ্রণী ভূমিকা।
পরিবার ও সমাজের সম্মিলিত দায়িত্ব
শিক্ষার্থীর নৈতিক গঠনে শিক্ষক, অভিভাবক এবং সমাজের দায়িত্ব অপরিসীম। একজন শিক্ষককে হতে হবে জীবন্ত আদর্শ, আর অভিভাবককে সন্তানের চরিত্র গঠনে মনোযোগী হতে হবে। ভালো কাজের উৎসাহ ও পুরস্কার এবং শৃঙ্খলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৎ ও আল্লাহভীরু বানানো সম্ভব।
জীবনের তিন মূল ভিত্তি
প্রতিটি শিক্ষার্থীকে কর্মজীবন বা উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের আগে তিনটি গুণ অর্জন করা জরুরি:
১️ আল্লাহভীরুতা
২️ সততা
৩️ দক্ষ নাগরিকত্ব
এই গুণগুলো অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুধু নিজেদের নয়, বরং পুরো জাতির ভবিষ্যৎ আলোকিত করতে পারবে।
আমরা দোয়া করি, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে দ্বীনের আলো ছড়িয়ে পড়ুক। শিক্ষার্থীরা হোক আল্লাহভীরু, সৎ এবং দক্ষ নাগরিক, যারা দেশ ও উম্মাহকে গর্বিত করবে এবং ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।
লেখক: অধ্যক্ষ উলুয়াইল ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা, মৌলভীবাজার।