‘স্বৈরাচারের পতন ঘটলেও স্বৈরাচারের লেজ কিন্তু এখনো গুপ্তভাবে নড়াচড়া করে’
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭:৩৯ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি এম নাসের রহমান বলেছেন, এবছরের দূর্গা পূজাটা একটু স্পর্শকাতর। ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানে এক বছর আগে এক স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে এ দেশে। স্বৈরাচারের পতন ঘটলেও স্বৈরাচারের লেজ কিন্তু এখনো নড়াচড়া করে। আর এ লেজ গুপ্তভাবে নড়াচড়া করে। স্বৈরাচারের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী পার্শ্ববর্তী দেশে হাজার হাজার। এরা এই দূর্গাপূজা উৎসব আসলে হয়তো তারা নিজেদের মোক্ষম একটা সুযোগ নিতে পারে৷ এখানে কোন একটা ডিষ্টার্বেন্স ক্রিয়েট করার জন্য। সেজন্য আমাদের সবাই কে দল মত নির্বিশেষে যাতে হিন্দু ভাইবোনেরা তাদের সবচেয়ে বড় মহোৎসব অত্যন্ত সুন্দর ভাবে করতে পারেন। কিছু একটা আগে হয়নি বলে আগামীতে হবে না আমার যেন সেজন্য আত্মতুষ্টিতে না ভোগি। আমাদের সবাই কে সজাগ থাকতে হবে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখতে স্বেচ্ছাসেবক থাকতে হবে। বিশেষ করে রাতের বেলা। পুলিশ থাকলেও আমরা যদি নিজেরা সচেষ্ট থাকি তাহলে পূজামণ্ডপ গুলোকে সিকিউরড থাকবে। পূজামণ্ডপের আশপাশের জায়গায় সকলেই খেয়াল রাখবেন। কোনো জিনিস সন্দেহ জনক মনে হলে সাথে সাথে পুলিশকে খবর দিবেন৷ সেজন্য আমি সবাই কে বলবো সার্বজনীন পূজা মন্ডপ হোক আর ব্যক্তি গত পূজা মণ্ডপ হোক নিজেরা আগে নিজেরাই একটুখানি সচেষ্ট হবেন৷ পুলিশ অবশ্যই সার্বক্ষণিক সহায়তা দিবে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের এম সাইফুর রহমান অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা আয়োজিত শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও মডেল থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমানের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহবায়ক মো.ফয়জুল করিম ময়ূন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি এড. সুনীল কুমার দাশ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ইয়ামীর আলী, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, মাওলানা জামিল আহমেদ আনসারি, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য স্বাগত কিশোর দাশ চৌধুরী, এনসিপির মৌলভীবাজার জেলার প্রধান সমন্বয়ক ফাহাদ আলম, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা সভাপতি আশু রঞ্জন দাশসহ বিভিন্ন পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,সাংবাদিক, সদর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার পূজা উদযাপন ফ্রন্ট ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দরা অংশ নেন।
আমি একথা বলছি একারণে, পতিত স্বৈরাচারী দল এধরণের একটা ডির্ষ্টাবেন্স তৈরি করা জন্য সুযোগ খুঁজবে। এখানে নাও হতে পারে বাংলাদেশ তো বিরাট জায়গা ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের মধ্যে হাজার হাজার পূজামণ্ডপে পূজা হবে। সরকার পুলিশ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নিরাপত্তা বাহিনী সজাগ থাকতে হবে। কিন্তু হিন্দু ভাইদের সর্বোপরি বেশি সজাগ থাকতে হবে। কারণ কোন কিছু চোখে পড়লে প্রথম আপনারাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দিতে হবে। প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করবেন মন্ডপের চারিদিকে। পূজা মন্ডপের আশে পাশে মেলাবসে যায় সব জায়গায় না হলেও অনেক জায়গায়। এগুলো কিন্তু একধরনের নিরাপত্তার হুমকি। এসব যেন মণ্ডপ থেকে দূরে থাকে। পৌর সভাগুলোতে ট্রাফিক জ্যাম কমাতে সচেষ্ট হতে হবে। পূজা মন্ডপগুলোতে পোষাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করতে হবে। তাহলে অপরাধী শনাক্তে ভালো ফল পাওয়া যাবে৷
নাসের রহমান আরও বলেন, আমরা চাই হিন্দু ভাই বোনেরা এই মহাউৎসবটা পালন করুক। কিন্তু পলাতক স্বৈরাচারের লেজ যাতে নড়াচড়া না করে সেদিকে পুলিশ নিরাপত্তা বাহিনী গোয়েন্দা বাহিনীকে সজাগ থাকবেন। আর আমরা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যা সাধ্য আছে সব টুকু করার চেষ্টা করবো।